TVS rider 125: মাত্র ৯০,০৯৪ টাকা থেকে শুরু, ১২৫cc ইঞ্জিনে মিলবে পাওয়ার, স্টাইল আর মাইলেজ সবকিছু একসাথে
আজকের দিনে বাইক শুধু গন্তব্যে পৌঁছানোর মাধ্যম না, এটা আমাদের স্টাইল, কমফোর্ট আর স্মার্টনেসের পরিচয়ও বটে। আর সেই দিক দিয়ে দেখলে TVS Raider 125 একটা পারফেক্ট চয়েস হতে পারে। আপনি যদি একটা এমন বাইক খুঁজছেন যেটা দেখতে স্পোর্টি, চালাতে আরামদায়ক, ফিচারে ভর্তি এবং দামেও পকেটসই তাহলে Raider 125 আপনার জন্য একদম ফিট বসে যাবে।চলুন এবার একে একে জেনে নিই এই Raider 125 এর সমস্ত কিছু বিস্তারিতভাবে।
ইঞ্জিন ও পারফরম্যান্স
এই বাইকটিতে TVS দিয়েছে একটি ১২৪.৮ সিসির এয়ার-কুলড ইঞ্জিন, আপনি যখন গাড়িটি চালাবেন তখন এই ইঞ্জিন থেকে ১১.৩ বি এইচ পি পাওয়ার আর ১১.২ এম এম টর্ক উৎপন্ন হবে। যার ফলে আপনার এই গাড়িটি একদম স্মুথলি চলবে। আর এই গাড়িটিতে আছে ৫-স্পিড গিয়ারবক্স, যার ফলে গিয়ার শিফটিং খুবই স্মুথ। এই সবকিছুর ফলে আপনি এই গাড়িটিকে শহরের জ্যামে এবং হাইবেতেও আরামসে চালাতে পারবেন। এই গাড়িটিতে আরও একটি সুন্দর ফিচার্স দেয়া হয়েছে সেটি হলো দু'রকমের আলাদা রাইডিং মোড, একটি হল eco mode, আপনি যদি গাড়িটিকে এই মোডে চালান তো আপনি মাইলেজ বেশি পাবেন, অর্থাৎ এই মোডে আপনি গাড়িটিকে শহরের রাস্তায় বা ট্রাফিক জ্যামে চালাতে পারবেন। অন্যটি হলো power mode , আপনি যদি এই মুডে গাড়িটি চালান তো আপনি মাইলেজ একটু কম পাবেন কিন্তু গাড়িটি কে আপনি বেশি স্পিডে চালাতে পারবেন। অর্থাৎ আপনি যদি কোন হাইওয়েতে চালান তখন এই মোডটিতে চালাতে পারবেন। একটা কথা বারবার বলব আপনি গাড়ি সবসময় আসতেই চালাবেন কারণ সব সময় নিজের সেফটির দিকে খেয়াল রাখা উচিত এবং হেলমেট অবশ্যই ব্যবহার করবেন কারণ সব চাইতে জীবনের মূল্যই সব সময় বেশি।
ডিজাইন ও লুক
TVS Raider 125-এর ডিজাইন যেকোনো তরুণ রাইডারকে একবারে মন কেড়ে নেবে। সামনে থাকছে বোল্ড এলইডি হেডলাইট, যার DRL ডিজাইন একেবারে ইউনিক। স্পোর্টি ট্যাঙ্ক ডিজাইন, স্প্লিট সিট আর পিছনে আকর্ষণীয় টেইল ল্যাম্প সব মিলিয়ে বাইকটা দেখতে যেন একেবারে প্রিমিয়াম লুক দেয়। এক কথায় যদি বলি এই বাইকটির ডিজাইন এতটাই সুন্দর যে যেই দেখবে তার পছন্দ হবে আর এ ডিজাইন দেখে এটাই মনে হয় যেন আজকালকার ইয়ং জেনারেশন যেরকম মডেল চায় এই গাড়িটির ডিজাইন ঠিক যেন সেইরকমভাবেই বানানো হয়েছে।
সাসপেনশন ও ব্রেকিং
টিভিএস কোম্পানি তার ক্রেতাদের কমফোর্ট এবং সেফটির দিকে বিশেষ ধ্যান রেখেছে। কোম্পানি এই গাড়িটির সামনে টেলিস্কোপিক ফর্ক সাসপেনশন এবং পিছনে গ্যাস চার্জড সাসপেনশন দিয়েছে যার ফলে আপনি যখন গাড়িটি চালাবেন যদি রাস্তা খারাপও হয় অর্থাৎ রাস্তায় যদি গর্ত থাকে কিংবা আপনি যদি বাম্পারের উপর থেকে গাড়িটি নিয়ে ওঠেন তখন আপনার ঝাকুনি কম লাগবে। এর সঙ্গে সঙ্গে পিছনের যে সাসপেনশনটি আছে তার ফলে আপনি ভারী জিনিসও বহন করতে পারবেন এবং আপনার সঙ্গে যিনি পেছনের সিটে বসবেন তারও ঝাঁকুনি কম লাগবে। এক কথায় যদি বলি তো আপনি এই গাড়িটিকে যদি খারাপ রাস্তাতেও চালান তো আপনি কমফোর্টেবল ভাবেই চালাতে পারবেন আপনার কোন অসুবিধা হবে না।
আর যদি সেফটির কথা বলি তো এই গাড়িটির ডিস্ক ভ্যারিয়েন্টে থাকছে সামনে ডিস্ক ব্রেক আর পিছনে ড্রাম ব্রেক দিয়েছে, এই ব্রেকের সঙ্গে CBS সিস্টেম আছে যার ফলে আপনি যখন পিছনের ব্রেকটি মারবেন তখন সেই মুহূর্তে স্পিড এডজাস্ট করে সামনে চাকাও থামবে যার ফলে আপনার গাড়িটির স্লিপ করার সম্ভাবনা কমে যাবে। এবং গাড়ি নিয়ন্ত্রণে থাকবে। আপনাকে আমি একটা কথাই বলবো যে যখনই গাড়ি চালাবেন সব সময় সতর্ক হয়েই গাড়ি চালান এটাই আমার অনুরোধ আপনার কাছে কারণ আপনার সেফটি সবার আগে।
টেকনোলজি ও ফিচারস
Raider 125 বাইকে আপনি পাচ্ছেন অনেক স্মার্ট ফিচারস সেগুলি হল
১. ফুল ডিজিটাল ডিসপ্লে
২. ইন-বিল্ট ইউএসবি চার্জার
৩. এবং SmartXonnect ভার্সনে আছে ব্লুটুথ কানেক্টিভিটি, যেখানে আপনি ফোন কল, মেসেজ, ন্যাভিগেশন সবকিছুই ডিসপ্লে তে পেয়ে যাবেন।
সব মিলিয়ে, একটা ১২৫cc বাইকে এত ফিচার সাধারণত দেখা যায় না।
ফুয়েল ট্যাঙ্ক, মাইলেজ ও ওজন
এই বাইকটিতে যে ফুয়েল ট্যাংকি আছে সেটিতে আপনি দশ লিটার পেট্রোল ভরতে পারবেন। আর টিবিএস দাবি করেছে যে এই গাড়িটি এক লিটার তেলে ৫৬ থেকে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত মাইলেজ দিতে পারে। আমার মতে এই মাইলে মোটামুটি ভালই আপনি যদি অফিসে যাতায়াত করেন বা কলেজে যান এবং দৈনন্দিন যদি কোন কাজবাজ করেন এই গাড়িটিকে নিয়ে তো করতেই পারবেন খুব সহজেই। আর আমার অভিজ্ঞতা অনুযায়ী গাড়ির মাইলেজের কথা যদি বলি তো গাড়ির মাইলেজ ডিপেন্ড করে সব সময় যে আমি কেমন রাস্তায় গাড়িটি চালাচ্ছি। এর মানে হলো আমি যদি গাড়িটিকে শহরের জ্যামে যেখানে ট্রাফিক বেশি অথবা গলিতে চালাই সেখানে গাড়ির মাইলেজ সব সময় একটু কম পাওয়া যায়। কারণ আমাকে এইসব রাস্তাতে বেশি ব্রেক ও ক্লাজ ব্যবহার করতে হয়। এর ফলে তেল একটু বেশি খরচ হয়। এবং মাইলেজও কম পাওয়া যায় কিন্তু আপনি যদি এই গাড়িটিকে যখন হাইওয়েতে চালাবেন যেখানে ট্রাফিক কম থাকে একটানা গাড়িটি চালাতে পারছেন। তখন আপনাকে ব্রেক ও ক্ল্যাচ কম ব্যবহার করতে হয়। এর ফলে তেল ও একটু কম পোড়ে। এরফলে মাইলে বেশি পাওয়া যায়। এই জন্য আমি বলব যে গাড়ির মাইলে সবসময় ডিপেন্ড করে যে গাড়িটি কিরকম রাস্তায় চালানো হচ্ছে। তাই মাইলে একদম একুরেট বলা সম্ভব হয় না কিন্তু মোটামুটি একটু ধারণা করে বলা যায়। একটা কথাই আমি বারবার আপনাকে বলব আপনি গাড়ি যেখানেই চালান না কেন সাবধানের সঙ্গে চালাবেন সতর্ক হয়ে চালাবেন।
এই গাড়িটির ওজন মাত্র ১২৩ কেজি, এর ফলে এই গাড়িটি যারা নতুন চালানো শিখেছে তারাও এই গাড়িটিকে খুব সহজেই চালাতে পারবে।
দাম, ভ্যারিয়েন্ট ও রঙ
আপনি যদি আমার এই লেখাটি এতক্ষণ ধরে পড়েছেন তো আপনি এখন ভাবতেই পারেন যে এই গাড়িটির দাম তালে কত হবে, হ্যাঁ এবার আমি আপনাকে এই গাড়িটির দাম ভেরিয়েন্ট ও রঙ কি কি আছে সেগুলো এক এক করে বলবো। এই গাড়িটি আপনি বর্তমানে তিনটি ভেরিয়েন্ট পাবেন
১. Drum ভেরিয়েন্টে
২. Disc ভেরিয়েন্টে
৩. Smart connect ভেরিয়েন্টে
আর এই গাড়িটির যদি দামের কথা বলি তো এই গাড়িটি দাম শুরু হচ্ছে মাত্র 90,094 টাকা (এক্স-শোরুম)। আর এই গাড়িটি আপনি চার রকম রঙে পাবেন সেগুলি হল Fiery Yellow, Striking Red, Wicked Black আর Fearless Red। এক কথায় যদি বলি কোম্পানি রং ভেরয়েন্ট কোন দিক থেকেই কাউকে নিরাশ করেনি কারণ প্রত্যেকে তার তার পছন্দমত গাড়িটি বেছে নিতে পারবে।
সংক্ষেপে বললে
আপনি যদি একটা ভালো লুকিং, কম তেলের খরচে, স্মার্ট ফিচারে ভরপুর বাইক খুঁজছেন তাহলে আপনার জন্য TVS Raider 125 একটা এক্সেলেন্ট অপশন। ছাত্র, অফিস কর্মী বা ফার্স্ট টাইম বাইকার সবার জন্যই এটা বাজেটের মধ্যে একটা বেস্ট চয়েস হতে পারে।
ডিসক্লেমার
এই পুরো লেখাটা আমি নিজের মতো করে বিভিন্ন সোর্স ঘেঁটে, ভালো করে বুঝে লিখেছি। এটা কোনো কোম্পানির স্পনসর্ড কনটেন্ট না। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাইকের দাম ফিচারস পরিবর্তন হতে পারে তাই অনুগ্রহ করে বাইক কেনার আগে কোম্পানির অফিসিয়াল সাইট এবং আপনার কাছাকাছি শোরুমে গিয়ে বাইকটির বর্তমান সমস্ত তথ্য ভালো করে যাচাই করে তারপরেই কিনবেন। গাড়ি কেনাটা সম্পূর্ণ আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার।
0 Comments