ঝাল সুজি রেসিপি: বাচ্চাদের জন্য সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর নোনতা সুজি, একবার খেলেই বারবার চাইবে
পরিচিতি
বাচ্চা সুজি খেতে চাইছে না? একবার আমার এই পদ্ধতিতে সুজি তৈরি করে দেখুন। বাচ্চা একবার নয়—একবার খেলে বারবার চাইবে।
সুজি হল একটি পুষ্টিকর খাদ্য সেটা আমরা সবাই জানি কারণ ছোটবেলায় আমাদের মায়েরা আমাদেরকে তাড়াতাড়ি করে যদি কিছু টিফিন করে দেয়ার হত তো তারা আমাদের মিষ্টি সুজি বানিয়ে দিতেন। কিন্তু আমি আপনাদেরকে আজকে ঝাল সুজি রেসিপি বলব যেটি খেতে মিষ্টি হবে না কিন্তু সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর হবে। যেটি আপনি কম সময়ে বানাতে পারবেন 15 থেকে কুড়ি মিনিটের মধ্যেই আপনি অনায়াসে এটি তৈরি করে ফেলতে পারবেন এবং আপনার বাচ্চাকে অথবা নিজেও টিফিনের সময় এটি বানিয়ে খেতে পারবেন এতে আপনার পেট ভরে যাবে এবং স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।
আমি রোজ মিষ্টি সুজি খেতে চাইতাম না বলে আমার মা আমাকে এই পদ্ধতিতে নোনতা সুজি বানিয়ে দিতেন। এটি বানানো আমি আমার মায়ের কাছ থেকেই শিখেছি। এখন আমি আপনাকে এই সুজি দিয়ে নাস্তা রেসিপিটি সম্পূর্ণ পদ্ধতি ও কি কি লাগবে সমস্ত কিছু এক এক করে বিস্তারিতভাবে বলব যাতে আপনি অনায়াসেই খুব সহজেই এটি বানাতে পারেন।
উপকরণ (ঝাল সুজি বানাতে যা লাগবে)
১. সুজি: ২০০ গ্রাম
২. ঘি: দু চামচ (আমরা ঘরে যে চামচ খাওয়ার জন্য ব্যবহার করি সেই চামচের)
৩. পেঁয়াজ: একটি (কুচি কুচি করে কেটে নেবেন)
৪. গাজর: মিডিয়াম সাইজের দুটি (কুচি কুচি করে কাটা লম্বা লম্বা)
৫. বিনস: ১০০ গ্রাম
৬. টমেটো: মাঝারি সাইজের একটা (কুচি কুচি করে কাটা)
৭. নুন: তিন চিমটি
৮. আলু: বড় সাইজের একটা (ছোট ছোট করে কাটা আলু চচ্চড়িতে যেরকম ছোট ছোট আলু কাটে সেরকম)
৯. সাদা তেল: তিন চামচ
১০. কারি পাতা: এক চামচ
১১. বাদাম: ২৫ গ্রাম (ভাজা বাদাম খোসা ছাড়ানো)
১২. চিনি: সামান্য
১৩. লংকা: ২ পিস কুচি কুচি করে কাটা
১৪. হলুদ: হাফ চা চামচ
১৫. জল: পরিমাণ মতো
পদ্ধতি (Step-by-step ঝাল সুজি রেসিপি)
Step 1: সুজি ভাজা
প্রথমে গ্যাসটি জ্বলান জ্বালিয়ে তাতে কড়াই বসান এবং কড়াইতে এক চামচ ঘি দিন। ঘি গরম হয়ে গেলে সুজিটা দিয়ে দিন। তারপর সুজিটা খুন্তি দিয়ে নাড়তে থাকুন। এবং কিছুক্ষণ পর দেখবেন সুজিটা হালকা লাল লাল হয়ে গেছে তখন সুজিটিকে নামিয়ে নিন। একটি জিনিস খেয়াল রাখবেন সুজিটিকে খুন্তি দিয়ে নাড়তে থাকবেন না হলে কিন্তু সুজিটা পুড়ে যাবে।
Step 2: সবজি ভাজা
এরপর কড়াইতে তিন চামচ সাদা তেল দিন এবং অবশিষ্ট যে এক চামচ ঘিটি আছে সেটিও দিয়ে দিন। সেটি একটু গরম হলে তারপর তাতে একে একে আলু, গাজর, বিনস কড়াইতে দিয়ে দিন এবং কিছুক্ষণ ভাজুন। খেয়াল রাখবেন বেশি ভাজবেন না। হালকা ভাজা হয়ে গেলে তার মধ্যে পেঁয়াজ কুচি, টমেটো কুচি, লঙ্কা কুচি, নুন, হলুদ দিয়ে ওটিকে ভালো করে ভাজুন। সঙ্গে বাদাম গুলিও দিয়ে দেবেন।
Step 3: সুজি মেশানো
এবার খুন্তি দিয়ে দেখে নিন সবজিগুলো ঠিকমতো সেদ্ধ হয়েছে কিনা। সেদ্ধ হয়ে গেলে ওর মধ্যে ভাজা সুজিটি দিয়ে দিন। দিয়ে ভালো করে ওই সবজির সাথে সুজিটাকে মিশিয়ে নিন। তারপর ওই সুজিটির ওপরে হালকা হালকা করে জল ছিটিয়ে সেটিকে নাড়তে থাকুন। খেয়াল রাখবেন জল দেয়ার পরে কিন্তু নাড়ানো বন্ধ করবেন না—তাতে সুজিটি দলা পেকে যাবে। আর বেশি পরিমাণে জল দেবেন না, হাতের মধ্যে নিয়ে অল্প অল্প করে জল ছিটিয়ে দেবেন। এরপর ৪-৫ মিনিট ভালো করে নেড়ে, জল ছিটিয়ে ছিটিয়ে, তারপর কারিপাতা দিন এবং দুই চিমটি চিনি দিন। আর এক মিনিটের মতো নেড়ে অন্য একটি পাত্রে নামিয়ে নিন। এই ভাবেই তৈরি হয়ে গেল আপনার সুস্বাদু স্বাস্থ্যকর সুজি।
টিপস (ঝাল সুজি পারফেক্ট করার জন্য)
১. সবজি ও সুজি একসাথে যখন ভাজবেন তখন জল একবারে দেবেন না। জলটি ছিটিয়ে ছিটিয়েই দেবেন না হলে সুজিটি দলা পেকে যাবে এবং ঝুরঝুরে হবে না।
২. কড়াইতে যখনই সুজি দেবেন তখন গ্যাস কমিয়ে নেবেন। গ্যাস বাড়িয়ে রাখলে সুজি পুড়ে যাবে—সেটা প্রথমে ভাজার সময়ও এবং শেষে সবজির মধ্যে মেশানোর সময়ও।
উপসংহার
সন্ধ্যার টিফিন হোক অথবা সকালের টিফিন আপনি যদি ভাবছেন যে কি টিফিন করলে বাচ্চা ও আপনার পরিবার ভালো খাবে এবং সেটি পুষ্টিকর হবে তাহলে আপনি এই ঝাল সুজি রেসিপিটি অবশ্যই একবার তৈরি করে দেখতে পারেন। আমি আমার মায়ের কাছ থেকে শেখা এই রেসিপিটি আপনাদের কাছে শেয়ার করলাম আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। কারণ ঝাল সুজি বানানোর সময় সুজিটি অনেক সময় দলা পেকে যায়, কিন্তু আমার এই পদ্ধতিতে আপনি যদি ঝাল সুজি তৈরি করেন তো এটি একদম ঝুরঝুরে হবে। কারণ আমি আমার নিজস্ব অভিজ্ঞতা থেকে আপনাদেরকে বললাম আমি বাড়িতে বানালে এরকম করেই বানাই তাই আপনাদেরকে এত সহজে বলতে পারলাম।
আপনার কেমন লাগলো কমেন্টে অবশ্যই জানাবেন এবং আপনার যদি অন্য কোন পদ্ধতি জানা থাকে সেটি অবশ্যই জানাবেন।
আপনার দিনটি শুভ হোক
0 Comments